Subscribe Us

কিন্তু হাতি-বেগার আইন আর চলল না। হাতি-বেগার আইন কি তা আর চলল না কেন

  "কিন্তু হাতি-বেগার আইন আর চলল না।"-হাতি-বেগার আইন কি তা আর চলল না কেন ?

অথবা

"প্রজারা একদিন বিদ্রোহী হয়ে উঠলো"  প্রজারা কেন বিদ্রোহী হয়ে উঠেয়েছিলো?

উত্তর- সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের রচনা 'আমার বাংলার' "গারো পাহাড়ের নীচে" নামক অংশে আমরা "হাতি বেগার" নামক আইনের প্রসঙ্গটি পাই।

 হাতি বেগার আইন- ময়মনসিংহের গারো পাহাড় অঞ্চলে প্রাচীনকালে প্রচলিত এক দমনপীড়ন মূলক জমিদার আইন কে বলা হতো হাতিবেগার।

হাতিবেগার আইন উদ্ভব- তৎকালীন জমিদারের ছিল হাতি ধরার খুব শখ। তার জন্য পাহাড়ে মাচা বাঁধা হত। সেই মাচার উপরে জমিদার ও তার সেপাই নিয়ে নিরাপদে বসে থাকতেন। এরসঙ্গে পান থেকে চুন না খসে যাওয়ার ঢালাও ব্যাবস্থ। এই শখ মেটানোর জন্য এই ভয়ানক হাতিবেগার নিয়ম তৈরি হয়।

 হাতিবেগার আইনের নিয়ম- প্রত্যেক গ্রাম থেকে চাল, চিড়ে বেঁধে প্রজাদের আসতে হতো। যে জঙ্গলে হাতি আছে সেখানে তাদের বেড় দিয়ে দাঁড়াতে হত। ছেলে বা বুড়ো কারও ছাড় ছিল না।

শিকার- হাতি বেড় দিতে গিয়ে কেউ সাপের কামড়ে কেউ বা বাঘের আক্রমণে প্রাণ দিত। কিন্তু এই নিয়ম মানার ছাড়া কোন গতি ছিল না তাদের। আর এই আইনের নামই ছিল "হাতিবেগার"।

 হাতি বেগার আইন না চলার কারণ- প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই অন্যায় সহ্য করতে করতে প্রজাদের একদিন ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গে, তাদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম থেকে গ্রামে। সেই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন গোরাচাঁদ মাস্টার। চাকলায়, চাকলায় মিটিং বসে। কামরশালায় তৈরি হতে থাকে মারাত্মক অস্ত্র শস্ত্র। শেষ পর্যন্ত জমিদারের পল্টনের হাতে প্রসাদের হার হলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত "হাতি-বেগার" আর চলল না। এভাবে "হাতি বেগার আইন" বন্ধ হয়ে যায়।