ভূমিকা→ 1941 খ্রিস্টাব্দে জার্মানির সাড়াশি আক্রমণের মুখে মিত্রশক্তি ভুক্ত দেশ গুলি নাজেহাল হয়ে পড়ে এবং ইউরোপের বিভিন্ন যুদ্ধে বারবার বারবার পরাজিত হতে থাকে এবং ভারতেও জাপানি আক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠলে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সাহায্যে এবং আলাপ-আলোচনার জন্য ব্রিটিশ মন্ত্রী সভার সদস্য স্যার স্টাফোর্ড ক্রিপস 1942 খ্রিস্টাব্দে 23 শে মার্চ ভারতে আসেন তার এই ভারতে আগমন ক্রিপস মিশন নামে পরিচিত।
ক্রিপস প্রস্তাব
1942 খ্রিস্টাব্দে ক্রিপস ভারতে বিভিন্ন নেতৃবিন্দের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে এক গুচ্ছ প্রস্তাব রাখেন যা ক্রিপস প্রস্তাব নামে পরিচিত।এই প্রস্তাব গুলি হল-
(1) যুদ্ধের ভারত ডোমিনিয়ন এর মর্যাদা দেওয়া হবে।
(2) যুদ্ধের পর ভারতীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সাংবিধানিক সভা গঠন করা হবে।
(3) সংবিধান সভায় সদস্যগণ প্রাদেশিক আইনসভায় নিম্নকক্ষ দ্বারা নির্বাচিত এবং দেশীয় রাজ্যগুলি প্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত এবং দেশীয় রাজ্য গুলির প্রতিনিধিরা দেশীয় রাজা দের দারা মনোনিত হবেন।
(4) এই সংবিধান সভা ভারতের জন্য নতুন সংবিধান রচনা করবে।
(5) ভারতের কোনো দেশীয় রাজ্য যদি এই সংবিধান গ্রহণে অসংমত হয় তবে সেই দেশীয় রাজ্য নিজের সংবিধান রচনা করবে।
(6) সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত সেনা বাহিনীর উপর ব্রিটিশ সরকারের পূর্ণ কর্তৃত্ব থাকবে।
(7) ভারতীয় দের সহযোগিতায় ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় সম্পদ যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করবে।
(8) বাড়োলাটের কার্যনির্বাহী পরিষদের আপাতত বেশি সংখ্যক ভারতীয় সদস্য নেওয়া হবে।
উপসংহার→ পরিশেষে বলা যায় ক্রিপস প্রস্তাব ভারতকে পূর্ণ স্বাধীনতা দানের প্রতিশ্রুতি দেয়নি, প্রদেশগুলোকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার দিয়ে পরোক্ষভাবে মুসলিম লীগের পৃথক পাকিস্তান গঠনের দাবিকে সমর্থন করা হয়। ভবিষ্যতে কী হবে তাই নিয়ে ক্রিপস প্রস্তাবে আলোচনা করা হয়েছে। ভারতীয়দের দ্রুত স্বাধীনতা দানের কথা এখানে বলা হয়নি। তাই গান্ধীজী বলেছেন, "একটি ফেল পড়া ব্যাংকের ওপর আগামী দিনের চেক"। এবং হরিজন পত্রিকায় তিনি এই প্রস্তাবকে দুর্ভাগ্য জনক প্রস্তাব বলেই অভিহিত করেছেন।