Subscribe Us

সার্ক গঠনের কারণ, লক্ষ্য ও সমস্যা | উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৫

সার্ক:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভৌগোলিক এলাকাভুক্ত দেশগুলি নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত সহযোগিতার কারণে আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে তুলেছিল। এগুলির মধ্যে অন্যতম হলো সার্ক অর্থাৎ South Asian Association For Regional Co-operation

সার্ক গঠনের উদ্দেশ্য ও সমস্যা নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাসের চিত্র

বর্তমানে এই সার্কের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ এবং আফগানিস্তান (যদিও আফগানিস্তান পরে যুক্ত হয়েছে)। এই সার্ক গঠিত হয় 1985 খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে।

প্রেক্ষাপট:

1985 খ্রিষ্টাব্দের 8 ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রেক্ষাপট ছিল:

1. জিয়াউর রহমানের শ্রীলঙ্কা সফর: দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়ে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান 1979 খ্রিস্টাব্দে শ্রীলঙ্কা সফরে প্রস্তাব দেন।

2. সার্ক গঠনের সিদ্ধান্ত: জিয়াউর রহমানের সক্রিয় উদ্যোগে পরবর্তী কয়েক বছর সদস্য দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীগণ একাধিক সম্মেলনে মিলিত হন। অবশেষে 1983 সালে দিল্লি সম্মেলনে সার্ক গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

3. সার্ক এর প্রতিষ্ঠা: 1985 সালের 7-8 ডিসেম্বর ঢাকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে সার্ক গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য:

  • উন্নয়ন: অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সামাজিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন।
  • জনকল্যাণ: জনগণের কল্যাণ ও জীবনমান উন্নয়ন।
  • আত্মনির্ভরতা: স্বাধীনতা রক্ষা ও আত্মনির্ভরতা গঠন।
  • নিরাপত্তা: আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ।
  • বোঝাপড়া: পারস্পরিক বিশ্বাস ও সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি।
  • সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান: পারস্পরিক সংস্কৃতি ও সহযোগিতা।
  • শান্তিপূর্ণ সহবস্থান: শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রক্ষা।

সমস্যাসমূহ:

  • রাজনৈতিক অস্থিরতা: ভারত-পাক বিরোধ, সামরিক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
  • তামিল জঙ্গি সমস্যা: শ্রীলঙ্কা-ভারত সম্পর্কের অবনতি।
  • ভারসাম্যহীনতা: বড় ও ছোট রাষ্ট্রের মধ্যে শক্তির অসামঞ্জস্য।
  • মতভেদ: কার্যকলাপ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে মতপার্থক্য।
  • সহযোগিতার অভাব: সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও অগ্রগতি বাধা।

সাফল্য:

  • অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি।
  • সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে অগ্রগতি (বিশেষত শেখ হাসিনার ভূমিকা)।
  • বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সূচনা।
  • কাঠমান্ডুতে স্থায়ী সচিবালয় স্থাপন।
  • খাদ্য নিরাপত্তা ও শিশু কল্যাণে পদক্ষেপ।

মূল্যায়ন:

বর্তমানে সার্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সংগঠন হলেও তার প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য—দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি বজায় রেখে উন্নয়ন সাধন—অনেকাংশেই বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে।

স্বাধীন ভারতের প্রথম তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা লক্ষ্য ও গুরুত্ব আলোচনা