ভূমিকা→ ভারতের বিচার ব্যবস্থার শীর্ষে আছেন সুপ্রিম কোর্ট। তার নিচে আছে হাইকোর্ট এবং অন্যান্য অধীনস্থ আদালত গুলি। ভারতের বিচার ব্যবস্থার কাঠামো বিশ্লেষণ করলে এর কতগুলি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
(১) অখন্ড বিচার ব্যবস্থা→ ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান এই কাঠামো দুই ধরনের বিচার ব্যবস্থা থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় বিষয় সংক্রান্ত বিবাদের আছে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত। অপরদিকে রাজ্যের আইন সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার জন্য আছে রাজ্যের আদালত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রের মতো রাজ্যগুলোতে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সুপ্রিমকোর্ট আছে। কিন্তু ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দ্বৈত বিচার ব্যবস্থা নীতি স্বীকার করা হয়নি।
(২) দুর্বল যুক্তরাষ্ট্র আদালত→ ভারতের সুপ্রিমকোর্ট কোনো ভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের মতো শক্তিশালী নয়। সংবিধান বিরোধী কোনো আইন কে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিতে পারে। কিন্তু "আইনের ন্যায় সঙ্গত পদ্ধতি" অনুসারে আইনের নীতি যৌক্তি কথা বিচার করতে পারেনা। জরুরি অবস্থায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য বিশেষ কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে না।
(৩) আইনের দৃষ্টিতে সাম্য→ ভারতের সংবিধানে বলা হয়েছে যে "আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান" কিন্তু এই নিয়মের অনেক ব্যতিক্রম আছে। এই ব্যতিক্রমীর জন্য আদালতের ক্ষমতা বিঘ্নিত হয়েছে।
(৪) বিশেষ আদালত→ বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ভারতে শিল্প আদালত, সামরিক প্রশাসনিক আদালত, ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন-
(ক) ভারতের সর্বত্রই একি দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিধি অনুযায়ী বিচার কার্য পরিচালিত হয়। রাজ্যগুলিতে পৃথক পৃথক দেওয়ানী ও ফৌজিদারি আইন আছে।
(খ) বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতাকে রক্ষা করার জন্য ভারতীয় সংবিধানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
(গ) ভারতের দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য বিনা ব্যয়ে আইনগত সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও সর্বত্র গরিব লোকেরা সুযোগ পাচ্ছে না। সংবিধানের ৪২ তম সংশোধনে(১৯৭৬) এর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের আইনগত সাহায্যের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
(ঘ) রাজ্যে নিম্ন আদালত গুলির উপর হাইকোর্টের নিয়ন্ত্রণ আছে। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সুপ্রিমকোর্টে হাইকোর্টের ভূমিকা ইতিবাচক। নাগরিক অধিকার রক্ষায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভারতের সর্বোচ্চ তার উপর দেওয়া দায়িত্ব পালন করে চলেছে।
(ঙ) ভারতের ভ্রাম মান আদালতের ব্যবস্থা নেই।
(চ) ভারতে জুরির সাহায্যে বিচারের ব্যবস্থা নেই।